Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

খাদ্যে ঘনচিনির ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি

খাদ্যে ঘনচিনির ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি
ড. মারুফ আহমেদ১ সৌরভ প্রামানিক শুভ২
স্যাকারিন শব্দটি বাংলাদেশে সুপরিচিত হলেও ঘনচিনি নামটি অনেকটা নতুন। বাংলাদেশে স্যাকারিন, ঘনচিনি দুটি কেমিক্যালই  নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা লাভের জন্য চিনির পরিবর্তে ব্যবহার করছেন ঘনচিনি নামের ক্ষতিকর রাসায়নিক। যে সকল খাদ্যদ্রব্যে পূর্বে অসাধু ব্যবসায়ীরা স্যাকারিন ব্যবহার করতেন, সেখানে এখন ঘনচিনি ব্যবহার করছেন। এ যেন এক বিষের জাল থেকে বের হতে না হতেই আরেক জালে আবদ্ধ হচ্ছি আমরা। সোডিয়াম সাইক্লামেট বা ঘনচিনি হচ্ছে Cyclamic Acid এর সোডিয়াম লবন বা এস্টার যার রাসায়নিক সংকেত- C6H12NNaO3S, আণবিক ভর-২০১.২২ গ্রাম/মোল। এটি একটি কৃত্রিম মিষ্টিবর্ধক (artificial sugar) যা সাধারণ চিনি অপেক্ষা ৩০-৫০ গুণ বেশি মিষ্টি। কোনো খাবারে মিষ্টতা আনতে যদি ৫০ কেজি চিনির প্রয়োজন হয় সেখানে মাত্র ১ কেজি ঘনচিনিই যথেষ্ট।
ঘনচিনি দেখতে অনেকটা সরু সাদাটে চিনির মতোই ক্রিস্টাল বা পাউডার।  স্যাকারিন, সাইট্রিক এসিড, সোডিয়াম সাইট্রেট ইত্যাদি কেমিক্যালের সাথেও এর যথেষ্ট মিল রয়েছে। ঘনচিনি পূর্বে সাধারণত ঔষধশিল্পে ব্যবহার করা হতো ঔষধের তিক্ততা দূর করে মিষ্টতা আনতে। এটি একটি ক্যালরি ফ্রি সুগার হওয়ায় এর ব্যবহার খাদ্যদ্রব্যেও বাড়তে থাকে। ঘনচিনির স্বাদও অনেকটা সাধারণ চিনির মতোই।  ১৯৭০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের Food and Drug Administration (FDA) খাদ্যদ্রব্যে ঘনচিনির ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করে। ১৯৬৯ সালে ল্যাবরেটরিতে ইঁদুরের উপর পরীক্ষা করে পাওয়া যায় যে মাত্রাতিরিক্ত  ঘনচিনি বৃক্কের ক্যান্সার হওয়ার জন্য দায়ী। গবেষণায় দেখা গিয়েছে ঘনচিনি বা সোডিয়াম সাইক্লামেট যখন আমাদের দেহে প্রবেশ করে তখন এর প্রায় ০-৬০% আমাদের অন্ত্রে অবস্থিত ব্যাকটেরিয়া দ্বারা হাইড্রোলাইজ হয়ে সাইক্লোহেক্সিলামাইন (cyclohexylamine) তৈরি করে যার কিছু অংশ আমাদের শরীর কর্তৃক শোষিত হয় এবং বাকি অংশ মূত্রের মাধ্যমে দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। সাইক্লোহেক্সিলামাইনের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে নানান মতামত রয়েছে, তবে European Commission এটিকে একটি reproductive tixicant হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে artificial sweeteners গ্রহণের ফলে অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া কমে যেতে পারে, ব¬াড সুগার নিয়ন্ত্রণ বাধাগ্রস্থ হতে পারে, বিভিন্ন ধরনের এলার্জিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাছাড়া ব্যক্তিভেদে মাথাব্যথা,  ডিপ্রেশনের মতো উপসর্গগুলো কম বেশি দেখা দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্ডিয়া, বাংলাদেশে ঘনচিনির ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও প্রায় একশরও অধিক দেশে এখনও ঘনচিনি ব্যবহারের অনুমোদন আছে। কিন্তু  তা অবশ্যই অনুমোদিত  মাত্রার মধ্যে। ঘনচিনি যে সকল দেশে খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহার করা হয়, সেগুলোতে  অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শর্করাবিহীন পানীয়, চুইংগাম, আইস্ক্রিম, কেক ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে।JECFA (Joint FAO/WHO Expert Committee on Food Additives) এর তথ্য অনুযায়ী  প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে ঘনচিনির দৈনিক গ্রহনযোগ্যতা প্রতি কেজি দৈহিক ওজনে মাত্র ০-১১ মিলিগ্রাম। অর্থাৎ, যদি কোনো ব্যক্তির ওজন ৬০ কেজি হয় তাহলে সে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৬৬০ মিলিগ্রাম বা মাত্র ০.৬৬ গ্রাম ঘনচিনি গ্রহণ করতে পারবে। শিশুদের মিষ্টির প্রতি ঝোক বেশি থাকায়  (WHO)  এর মতে প্রতি কেজি খাবারে ২৫০ মিলিগ্রামের কম ঘনচিনি ব্যবহার করলে সাস্থ্যঝুঁকির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কিন্তু বাংলাদেশে ঘনচিনির ব্যবহার হয় JECFA বা WHO কর্তৃক অনুমোদিত মাত্রা থেকে কয়েকগুণ বেশি পরিমানে। ঘনচিনি বাংলাদেশে ঘোল,মাঠা, দই, মিষ্টি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের মিল্কসেক,জুস, আইস্ক্রিম, আচারসহ যাবতীয় মিষ্টিজাতীয়  খাদ্যদ্রব্যে চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি সাধারণত সরাসরি খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহার করা হয়। অনেক সময় চিনির সাথে অথবা কখনও কখনও স্যাকারিনের সাথে সমন্বয় করে ব্যবহার করা হয়। যদিও অনুমোদিত মাত্রার মধ্যে ঘনচিনি ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী বলে প্রমাণিত হয়নি, কিন্তু বাংলাদেশে এর মাত্রাবিহীন ব্যবহার আমাদের জনসাস্থ্যর জন্য হুমকিস্বরূপ।
বাংলাদেশে ঘনচিনির আমদানি, বিতরণ ও ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ হলেও বিভিন্ন মুনাফালোভী অসাধু আমদানিকারক গোপনে এটি আমদানি করছে। যার ফলে বাংলাদেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পরেছে ঘনচিনি নামের বিষ। আমাদের খাদ্যাভাস আমাদেরকেই পরিবর্তন করতে হবে। ভেজাল খাদ্যের জাল থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অস্বাভাবিক দামে ক্রয়-বিক্রয়ের ঝোক কমিয়ে ন্যায্যমূল্যে ক্রয়-বিক্রয়ের অভ্যাস করতে হবে। এছাড়া মার্কেট মনিটরিং আরও জোরদার করতে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ Food Safety Authority, বিএসটিআইসহ সংশি¬ষ্ট অন্যান্য সংস্থা আরও তৎপর হলে আমরা ভেজাল খাদ্যের জাল থেকে বের হতে পারবো।

লেখক : ১প্রফেসর, ডিপার্টমেন্ট অফ ফুড প্রসেসিং এন্ড প্রিজারভেশন, ২বিএসসি ইন ফুড এন্ড প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং (৪র্থ বর্ষ), হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর-৫২০০, মোবাইল: ০১৭৫০৭৭৭৮৯৯, ই-মেইল: maruffpp@gmail.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon